বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আল্লামা মুহিব খানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অভিনেতা এ.বি.এম সোহেল রশিদঃ
মুহাম্মদ গাজী তারেক (নিজস্ব প্রতিবেদক)ঃ দুপুর গড়িয়ে তখন বেলা ৪টা। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে হঠাৎ করেই একের পর এক মানুষের আনাগোনা। সকলের গন্তব্য বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অষ্টম তলার ছাদ। খোলামেলা মুক্ত পরিবেশের এ এক ভিন্ন আয়োজন। চারদিক থেকে ছুটে আসা বাতাসের উপর জাগ্রত প্রহরের উষ্ণতায় আশে পাশের গাছ-লতাপাতাও যেন এই প্রথমবারের মতো জেগে উঠলো। একে একে ছুটে এসেছে শিক্ষাবীদ, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, গায়ক, সাংবাদিক, জ্ঞানী-গুণী সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ। রাজধানীর বাংলামটর স্থিত বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের শীর্ষ তলা সম্পূর্ণই লোকে লোকারণ্য। গতকাল (শনিবার) এরকমেরই এক ভিন্ন অনুষ্ঠান “জাগ্রত প্রহর” এর আয়োজন করেছেন আয়োজক কমিটি ‘জাগ্রত প্রহর সমন্বয় পরিষদ’। জাগ্রত কবি আল্লামা মুহিব খানের ভালোবাসায় এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জাগ্রত কবি মুহিব খানের শিষ্য ও ভক্তবৃন্দের অনেকেই। দীর্ঘ দুই ঘন্টাব্যাপী আসতে থাকা মানুষের উপস্থিততে শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় জাগ্রত প্রহরের মূল পর্ব। তারুণ্যের চারণ কবি খ্যাত ইখতিয়ার হুসাইনের উপস্থাপনায় পবিত্র কুরআনুল কারীমের আয়াত তেলওয়াতের মাধ্যমে আরম্ভ হওয়া এই অনুষ্ঠানে আল্লামা মুহিব খানের লেখা বিভিন্ন অসাধারণ কবিতা ও জালাময়ী দেশের গান পরিবেশনা করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ইসলামিক কালচারাল ইনস্টিটিউট (আই.সি.আই) ও কলরব সহ আরও অনেকেই। এসময় সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় আবৃত্তিকারক ইলিয়াস হাসান, ইব্রাহিম কোব্বাদী, এইচ.এম ইমরান সহ জাগ্রত কবি মুহিব খানের একাধিক ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীগণ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র অভিনেতা এ.বি.এম সোহেল রশিদ, গাঙচিল সাহিত্য পরিষদ এর সভাপতি কবি শাহী সবুর, শিশু পত্রিকা মাসিক কচিকাঁচার সম্পাদক শিশু সাহিত্যিক ম্যাডাম আলেয়া বেগম আলো, হ্যালো আড্ডার ইকবাল হোসেন ও সাংবাদিক আইজে চমক সহ দেশবরেণ্য কবি-সাহিত্যিকগণ। উক্ত জাগ্রত প্রহর এর সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা এ.বি.এম সোহেল রশিদ বলেন, “এতক্ষন আমরা যে ধরনের সংগীত ও অসাধারণ কবিতাগুলো শুনছিলাম তা যে আমাদের মাঝে উপস্থিত তরুন ব্যক্তিত্ব জাগ্রত কবি আল্লামা মুহিব খানের, তা সত্যিই এ যুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অনেক বিস্ময়কর উত্থান। আজ প্রকৃত পক্ষেই আমার মনে হচ্ছে- আমি অপ্রস্তুত থাকা স্বত্ত্বেও সত্যিকারের সাহিত্য অনুষ্ঠানে আপনাদের সাথে যোগ দিতে পেরেছি। আমি চলচ্চিত্র মানুষ হলেও সাহিত্যের প্রতি আমার অনুরাগ সেই প্রথম থেকেই। তাই আমি বরাবরই বিভিন্ন সাহিত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে থাকি। কিন্তু এরকম অসাধারণ সাহিত্যনুষ্ঠান আমার জীবনে আর কোনদিন পাইনি। এসময় তিনি বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলেন, আজ আমাদের মাঝে নজরুল নেই, ফররুখ নেই, নেই আরও যুগ বিজয়ী অনেক কবি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে- না, আমাদের মাঝে যুগ শতাব্দী পর নজরুল, ফররুখ রুপে মহান সৃষ্টিকর্তা আজকের এই জাগ্রত কবি মুহিব খানকে দুনিয়ার মানুষের কান্ডারী হিসাবে আবির্ভূত করেছেন। এ সময় তিনি উচ্চ কন্ঠে জাগ্রত কবি মুহিব খানের একটি বই হাতে নিয়ে একের পর এক জ্বালাময়ী পঙ্কতি ছুড়তে থাকলে আল্লামা মুহিব খান সম্পর্কিত তার বক্তব্যে বার বার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, মুহিব খান দেখতে দাঁড়ি-টুপিওয়ালা ও প্রকৃত ধর্মভীরু মানুষ হওয়ার কারণে যদি সাহিত্যঙ্গনে তাকে যথার্থ মূল্যায়ন না করা হয়, ইউরোপ থেকে আগত মৌলবাদ শব্দের সাথে তকমা লাগিয়ে যদি তাকে মৌলবাদী বলে স্বাব্যস্ত করা হয়, তবে সেটি হবে প্রকৃত সাহিত্যবীদ চরম লজ্জার ও পরবর্তী সাহিত্য ইতিহাসের অতি জঘণ্য অধ্যায়। এসময় তিনি আরও বলেন, আমি চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষ হয়ে আজকের এই অনুষ্ঠানে মুহিব খানের প্রতি গণ মানুষের যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা স্বচক্ষে দেখলাম এবং পাশাপাশি তার যেসব কবিতা ও সংগীত ইতোমধ্যে পরিবেশিত হয়েছে, সত্যিই আজ থেকে আমার হৃদয়ে মুহিব খানের প্রতি যে আকাঙ্খা ও অভিরুচির জন্ম নিয়েছে তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না। আমি মনে করি জাগ্রত কবি আল্লামা মুহিব খানের কাফেলার সাথে যারাই রয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই এক সুন্দর আগামীর অভিযাত্রী। এসময় তিনি ‘জাগ্রত প্রহর সমন্বয় পরিষদ’ এর প্রতি সাধুবাধ জানিয়ে বলেন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মতো স্থানে এ ধরনের আয়োজন যারা সাহসের সাথে উদ্যোগ গ্রহণ করে আয়োজনটি সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন, তাদেরকে সত্যিই ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে এরকম আরও অনুষ্ঠান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মতো ভালো স্থানে আয়োজন করার জন্য আয়োজক কমিটিকে আহ্বান জানান। সর্বশেষ তিনি জাগ্রত কবি আল্লামা মুহিব খানকে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা ও ¯েœহ জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।